পর্তুগালে বেতন কত? পর্তুগাল কর্মজীবী মানুষদের জন্য কেমন?

Ad Code

পর্তুগালে বেতন কত? পর্তুগাল কর্মজীবী মানুষদের জন্য কেমন?

 পর্তুগালে বেতন কত? পর্তুগাল কর্মজীবী মানুষদের জন্য কেমন?

পর্তুগাল বিশ্বের সুন্দরতম দেশগুলোর মধ্যে একটি । কর্মসংস্থানের জন্য যারা পর্তুগাল যেতে ইচ্ছুক তারা অবশ্যই জানতে চান পর্তুগালে সর্বনিম্ন বেতন কত টাকা। 

এছাড়া বাংলাদেশে পর্তুগাল দেশের নাম শোনেননি এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া মুশকিল। আজকে আমরা জানবো পর্তুগাল দেশটি কেমন? পর্তুগাল কাজের জন্য কেমন হবে? পর্তুগালে বেতন কেমন? এছাড়া পর্তুগালের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতন কত? কাদের জন্য পর্তুগাল যাওয়া ঠিক হবে? এসব যাবতীয় বিষয় নিয়ে বিস্তারিত।



অনেকে পর্তুগালের সর্বনিম্ন বেতন কত এ সম্পর্কে জানতে চান। কিন্তু কোথাও সঠিক উত্তরের অভাবে জানতে পারেন না। আর পর্তুগালের সুবিধা অসুবিধার কথাও সবার জানা উচিত। এছাড়া বর্তমান প্রেক্ষাপটে পর্তুগাল যাওয়া উচিৎ কিনা এবিষয়ে পোস্টটির শেষে আলোচনা করা হবে। তাই যারা পর্তুগাল নিয়ে বিস্তারিত সঠিক জানতে চান এই পোস্টটি তাদের জন্য। তাই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল।


আপনাদের সুবিধার্থে প্রথমে পর্তুগালের মুদ্রা ও এর মান নিয়ে আলোচনা করা হলো।


পর্তুগালের মুদ্রা কি ?

কমবেশ সকলেই জানেন পর্তুগালের মুদ্রার নাম হচ্ছে পর্তুগাল ইউরো বা Euro ।


 ১ ইউরো = কত টাকা? 

বর্তমান ১ ইউরো = ১১৬.৬৫ বাংলাদেশী টাকা।

এই মান প্রতিদিনই সামান্য হলেও ওঠানামা করে।


এবার আসা যাক পর্তুগাল বেতন কত এই সম্পর্কে।



পর্তুগালে বেতন কত?

পর্তুগালে বাংলাদেশী প্রবাসীদের কাছ থেকে এবং বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জানা যায়, বর্তমানে পর্তুগালের নূন্যতম বেতন ৭০৫ ইউরো । যা বর্তমান বাংলাদেশী টাকায় কনভার্ট করলে দাড়ায় ৮২২৩৯.৫৩ টাকা ।


যদিও এবছরে পর্তুগালে বেতন বৃদ্ধি পাওয়ার কথা ছিল। অনেক পুরাতন শ্রমিকদের থেকে জানা যায় এখানে মজুরি ছিলো ১৫০ ইউরো। যখনই বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেছে প্রতি বছরই শ্রমিকের বেতন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর বর্তমানে পর্তুগালের মাসিক মজুরি ৭০৫টাকা। সরকার বলেছেন ২০২৬ সালের মধ্যে শ্রমিকের মজুরি ৯০০ ইউরো করা হবে। পর্তুগাল একটি উন্নয়নশীল দেশ। খুব দ্রুতই পর্তুগাল একটি উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।


পর্তগালের আইনসভার জন্য সরকারের লক্ষ্য ছিল এ বছরের মধ্যে মাসিক পারিশ্রমিক ৭৫০ ইউরোতে পৌছাবে। কিন্তু ২০২২ সালের বাজেট প্রস্তাবের ব্যর্থতার কারণে বর্তমানে ন্যূনতম মাসিক পারিশ্রমিক ৭০৫ ইউরো হয়েছে। রাজ্য বাজেট প্রস্তাবের ব্যর্থতার কারণে বর্তমানে অনুষ্ঠিত মধ্যবর্তী নির্বাচনের একটি বড় কারণ হিসেবে উল্লেখ্য করেছেন।

পরিশেষে বলা যায় , পর্তুগালে সর্বনিম্ন বেতন ৭০ হাজার টাকা দিয়ে শুরু হয়। যা ১ লাখে উন্নীত করার সম্ভাবনা রয়েছে।


পর্তুগালে কোন কাজের লোকের চাহিদা বেশিঃ

পর্তুগাল উন্নয়নশীল দেশ হওয়া সত্বেও একসময় তাদের কাজের লোকের ভীষণ অভাব ছিল। একসময় পর্তুগাল সরকার বাইরের দেশে থেকে প্রচুর শ্রমিক নিয়োগ দিয়েছে।

খবর এসেছে বর্তমানে পর্তুগালে বেশ সংকট চলছে। তবে পর্তুগালে অবস্থানরত অনেক বিদেশীরা বেশ মোটা অংকের অর্থ উপার্জন করছেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কাজ হলো পর্যটক ও হোটেল ব্যাবসা আর সমুদ্র সৈকতকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ধরনের ব্যাবসা।


এছাড়া বেশ কিছু কাজ রয়েছে। যেমন- হোটেল/রেস্টুরেন্টের কাজ, নির্মান শ্রমিক, ড্রাইভার, কেয়ারিং বয়, ক্লিনারের কাজ ইত্যাদি। এছাড়া ও পর্তুগালে কম্পিউটার অপারেটরেরও বেশ চাহিদা রয়েছে।


পর্তুগাল ভিসার আবেদন করার নিয়মঃ 

পর্তুগাল যাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনার ভিসার দরকার হবে। দুই ভাবে পর্তুগাল ভিসার আবেদন করা যায়।


১. এজেন্সির মাধ্যমে পর্তুগালের কোন একটা কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করে।


২. আপনার কোন পরিচিত লোক, আত্মীয়- স্বজন বা কাছের কেউ পর্তুগাল থাকলে তার মাধ্যমে।


Specila Tips: পর্তুগাল যাওয়ার জন্য কোন এজেন্সির মাধ্যমে যোগাযোগ না করে বাংলাদেশ শ্রম ও কর্মসংস্থান অথবা বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের থেকে সরাসরী আবেদন করবেন। 

এতে আপনার খরচ অনেক কমবে এবং বৈধ ভাবে ও পর্তুগাল যেতে পারবেন।


এছাড়া ও আপনি পর্তুগাল যাওয়ার জন্য পর্তুগাল ভিসা এজেন্সি ওয়েবসাইটে ভিজিট করে আবেদন এবং বিস্তারিত অনেক তথ্য জানতে পারবেন। 



পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগেঃ

বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগবে সেটা মূলত নির্ভর করবে ভিসার ক্যাটাগরি এবং মেয়াদের ওপর। এক এক ভিসার খরচ এক এক রকম। বাংলাদেশ থেকে পর্তুগাল যেতে সাধারণত ৮ থেকে ১০ লক্ষ টাকা খরচ হয়। তবে অনেকের ক্ষেত্রে এর বেশিও লেগেছে বলে জানা যায়।


কোন ক্যাটাগরীর ভিসা নিয়ে পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে তা নিয়ে পরবর্তীতে আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করবো। 


পর্তুগাল ভিসার ক্যাটাগরী-

পর্তুগালে অনেকে ভিন্ন ভিন্ন কাজের জন্য যেয়ে থাকেন । কেউ ঘুরাতে যান , কেউ কেউ লেখাপড়ার জন্য যান , আবার অনেকে চিকিৎসা কিংবা জীবিকার জন্য পর্তুগাল গিয়ে থাকেন।

 তাই অন্যান্য দেশের মতো পর্তুগালেও ভিসা বিভিন্ন ক্যাটাগরির হয়ে থাকে। যেমনঃ

পর্তুগাল টুরিস্ট ভিসা।

পর্তুগাল ওয়ার্ক পারমিট ভিসা।

পর্তুগাল স্টুডেন্ট ভিসা।

পর্তুগাল মেডিকেল ভিসা।

পর্তুগাল যেতে বিভিন্ন ধরনের ভিসার খরচঃ

অনেক মানুষ রয়েছেন যারা পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে সেই বিষয়টি সম্পর্কে জানার জন্য অনলাইনে সার্চ করে থাকেন। আপনাদের সুবিধার্থে নিচে একটি তালিকার মাধ্যমে পর্তুগাল যেতে কত টাকা লাগে সেটির সম্ভাব্য খরচ তালিকাভুক্ত করা হল।


মেডিকেল ভিসা - প্রায় ৪ লক্ষ টাকার মতন

স্টুডেন্ট ভিসা - প্রায় ৫ লক্ষ টাকার মতন

ওয়ার্ক পারমিট ভিসা - প্রায় ১০ লক্ষ টাকার মতন

টুরিস্ট ভিসা- প্রায় ৪ লাখ


এ পর্যায়ে আমরা বিভিন্ন ধরনের ভিসা সম্পর্কে জানলাম। আরো জানলাম কোন ভিসার জন্য কত খরচ হতে পারে।

এইবার আমরা জানবো পর্তুগালের বর্তমান পরিস্থিতি কেমন এবং এখন পর্তুগাল যাওয়া উচিৎ কিনা।



পর্তুগাল যাওয়া উচিৎ কিনা -

বর্তমানে পর্তুগালের যাওয়া উচিৎ হবে কিনা তা নির্ভর করে বর্তমানে পর্তুগালের পরিস্থিতি এবং কাজের চাহিদার উপর। বর্তমানে পর্তুগালে কাজের চাহিদা খুব বেশি নেই বলে জানা গেছে। বরং সেখানকার লোকেদের ভাস্যমতে সেখানে তেমন কাজের চাহিদা নেই। আর আবাসনের ব্যবস্থা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন সেখানকার বাংলাদেশী প্রবাসীরা। অর্থাৎ থাকা খাওয়া অনেক ব্যায় বহুল হয়ে পড়েছে।

পর্তুগালে বাংলাদেশী প্রবাসীদের মতে, পর্তুগাল যাওয়ার পূর্বে অবশ্যই খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে সেখানকার পরিস্থিতি এবং সেখানে গেলে সত্যিকার অর্থে লাভবান হবেন কিনা এ বিষয়ে।

সুতরাং বুঝতেই পারছেন, কিভাবে সিদ্ধান্ত নিবেন যে পর্তুগাল আদো যাওয়া ঠিক হবে কিনা। যাওয়ার আগে অবশ্যই খুব ভালো মতন ভেবে দেখুন। কারণ এমনিতেই পর্তুগাল যাওয়া অনেক ব্যায়বহুল।


পর্তুগালের সংক্ষিপ্ত পরিচিতিঃ 


পর্তুগাল, সরকারি বা অফিসিয়াল নাম ‘পর্তুগিজ রিপাবলিক’। ইউরোপের সর্ব দক্ষিণের শেষের একটি দেশ। 

অবস্থানগত দিক থেকে দেশটি আটলান্টিক মহাসাগরের পাড় ঘেসে অবস্থিত, যার জন্য দেশটিকে ‘সাগরকন্যা’ নামেও ডাকা হয়ে থাকে। 

আইবেরিয়ান উপদ্বীপ তথা পর্তুগালের সর্বমোট আয়তন ৯২ হাজার ২১২ বর্গ কিলোমিটার। জনসংখ্যা প্রায় ১ কোটি ২ লাখ ৮০ হাজারের মতো। 

অফিসিয়াল ভাষা পর্তুগিজ। রাজধানী লিসবন ও প্রচলিত মুদ্রার নাম ‘ইউরো’। পার্শ্ববর্তী দেশ স্পেন।

উপসংহারঃ

সম্মানিত পাঠক, এই পোস্টটিতে আমরা জানলাম পর্তুগালে কর্মসংস্থান নিয়ে, এবং পর্তুগালের বেতন নিয়ে। আর পর্তুগালে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের ভিসা সম্পর্কে। পরিশেষে আমরা আলোচনা করলাম পর্তুগাল যাওয়া উচিৎ হবে কিনা। আশাকরি সম্পূর্ণ তথ্যবহুল পোস্টটির সবকিছু বুঝতে পেরেছেন এবং কোনো প্রশ্ন থাকলে আমাদেরকে জানান । 


যদি পোস্টটি ভালো লাগে থেকে তবে আপনার বন্ধুদের সাথে অবশ্যই পোস্টটি শেয়ার করতে পারেন।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ